চন্দ্রযান -৩ র ঘুম কি আজ ভাঙবে? ইসরোর বিজ্ঞানীরা কি বলছেন?



চন্দ্রযান -৩ র ঘুম কি আজ ভাঙবে? ইসরোর বিজ্ঞানীরা কি বলছেন?


চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এসে পড়েছে সূর্যের সোনালী আলো। সকাল সকাল চন্দ্রযান -৩ কে ডাকতে শুরু করেছে ইসরো। এখন তার ঘুম  ভেঙে চোখ মেলে তাকানোর অপেক্ষায় ইন্ডিয়া। ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের সঙ্গে আবার যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য  অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে ইসরোর বিজ্ঞানী মহল। 




বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ইসরোর বিজ্ঞানীরা নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। শুক্রবার দিনভর আরও একাধিক পদ্ধতি কার্যকরী করা হবে। কী ভাবে বিক্রম ল্যান্ডারের কানে ইসরোর ডাক পৌঁছয়, সেটাই এখন দেখার।

উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর বিক্রম ল্যান্ডার এবং রোভার প্রজ্ঞানকে স্লিপ মোডে নিয়ে যায় ইসরো। ততদিনে অনেক তথ্য সরবরাহ করেছে সে। তার মধ্যে রয়েছে চাঁদের বুকে অক্সিজেন সহ একাধিক যৌগের হদিশ,  চন্দ্রকম্পন , সেখানকার তাপমাত্রার ফারাক। তবে শুক্রবার তারা জেগে উঠলে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। কেবলমাত্র তাই নয়,  শুক্রবার চন্দ্রযান-৩ জেগে উঠলে ,এক বিরাট অ্যাচিভমেন্ট হবে ইসরো র। 

জানা গিয়েছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর যেখানে ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানে ল্যান্ড করেছিল, সেখানে ইতিমধ্যেই সূর্যের আলো পড়তে শুরু করেছে, ফলে তাপমাত্রা কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে । সূর্যের আলোর সাহায্যে চন্দ্রযান ৩-র সোলার প্যানেলগুলির আবার সতেজ হয়ে ওঠার আশা দেখা দিয়েছে। ইসরোর তরফেও মরিয়া হয়ে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। -১৭৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করার পর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের  কলকব্জা কেমন আছে  তা জানার চেষ্টা করছেন এস সোমনাথ ও তাঁর সমগ্ৰ টিম।


ইসরোর স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের ডিরেক্টর নীলেশ দেসাই বলেন, '-১২০ থেকে -২০০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল রাতে চাঁদের তাপমাত্রা। ফলে ১৪ দিনের মাথায় ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানকে স্লিপ মোডে পাঠাতে হয়েছিল। ২০ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ধীরে ধীরে চাঁদে আবার  সূর্যালোক পড়তে শুরু করেছে। আমরা আশাবাদী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্য সোলার প্যানেলগুলি চার্জ হয়ে যাবে। আমরা আবার ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞানকে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হব।'


নীলেশ দেসাই আরও বলেন, 'আমাদের ভাগ্য ভালো থাকলে, আমরা চাঁদ থেকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব। যা আগামীদিনে চাঁদে পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। আশা করি শুক্রবার ভাগ্য আমাদের সহায়ক হবে। আর তা হলে চন্দ্রযান-৩ মিশনের এটাই হবে বোনাস।'


এর আগে ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমমাথ বলেছিলেন, 'সানসাইনের অপেক্ষায় আছি আমরা। সূর্য উঠলেই চন্দ্রযান-৩ আবার ক্ষমতা ফিরে পাবে। চাঁদের রাত নেমে আসার পর তাপমাত্রা -১৮০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। চারপাশটা গাঢ়ো অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল। কোনওভাবেই সেই পরিস্থিতিতে যন্ত্রপাতির কাজ করা সম্ভব নয়। আর যদি সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রপাতি আবার কাজ করা শুরু করে দেয়, তাহলে এর চেয়ে ভালো আর কী  হতে পারে। আশা করব তেমনটাই যেন হয়।'


শুক্রবার গোটা দিনের মধ্যে ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের  স্যুইচ অন হলেই ফের একবার রেকর্ড গড়বে ইসরো। এখন সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দেশবাসী।

No comments

Powered by Blogger.