Amkhoi Wood Fossil Park:আমখই উড ফসিল পার্ক (রাজ্যের প্রথম ফসিল পার্ক)
Amkhoi Wood Fossil Park,IllamBazar, Shantiniketan:
আমখই উড ফসিল পার্ক,
বীরভূম (রাজ্যের প্রথম ফসিল পার্ক)
আমখই, ইলামবাজারের চৌপাহাড়ী জঙ্গলের ভিতরে আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম । কয়েক লক্ষ বছর আগের Fossilised Forest Land টি পুকুর খনন এর সময় আবিষ্কৃত হয় । Amkhoi Wood Fossil Park 10 হেক্টর জমির ওপর বিস্তৃত । এটি রাজ্যের প্রথম fossil park যা 2017 থেকে 2018 র মধ্যে সরকারের উদ্যোগে গড়ে ওঠে ৷
আমখই উড ফসিল পার্ক ঘোরার অভিজ্ঞতা : My experience of visiting Wood Fossil Park
Shantiniketan যাওয়ার সময় আমরা আমখই উড ফসিল পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিই। শাল,নিম, আকাশমণি ইত্যাদি গাছের জঙ্গলের ভেতর দিয়ে গিয়ে সেখানে পৌঁছে যাই।
আমরা জানি গাছের ফসিল থেকে পেট্রোলিয়াম ,কয়লা এ সকল কিছু হয়। কিন্তু এই পার্কে গিয়ে গাছের এরকম ফসিল বা জীবাশ্ম দেখে আমরা অবাক হয়ে যাই। এগুলো দেখতে শ্বেত পাথরের মত সুন্দর এবং অবিকল পাথরের মতই শব্দ হচ্ছিল ।
গাড়ি থেকে নেমেই দেখতে পাই একটি গ্রাম্য পরিবেশ। সুন্দর সুন্দর মাটির বাড়ি, বাড়ির দেওয়ালে সুন্দর রঙিন চিত্র অঙ্কন করা, একটি সুন্দর বড় বাঁধানো চায়ের দোকান। আর তার ঠিক বিপরীতে সেই ফসিল পার্ক। তবে সেই চায়ের দোকানের সামনেই বাঁধানো জায়গাটিতে পড়েছিল প্রচুর জীবাশ্ম। আমরা সেগুলি হাতে নিয়ে দেখি, বেশ ভারী।
সেখানে বসে ছিলেন এক জন ভদ্রলোক (রামপ্রসাদ বাবু) । তিনি পার্কটি দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন। তিনি আমাদের বেশকিছু লাল মোরাম এর কালার পকেট দেখান। যেগুলি কোটি কোটি বছর আগের,আমার ভিডিওটিতে দেখতে পাবেন তিনি সেগুলো ঝাঁকিয়ে দেখাচ্ছেন , সেখান থেকে এমন একটি শব্দ আসছিল মনে হচ্ছিল ভেতরে কিছু গুড়ো মত আছে, যখন তিনি খুলে দেখালেন, দেখতে পেলাম সাদা গুঁড়ো গুঁড়ো ধুনোর মতো কিছু পদার্থ রয়েছে, ওনার কাছ থেকে জানতে পারলাম এটা হচ্ছে সাদা রং, এরকম অনেগুলো কালার পকেট দেখালেন, যে গুলো কোনোটাতে হলুদ, মেরুন , কালো ইত্যাদি রং রয়েছে।
Colour Pocket |
আগেই বলেছিলাম গ্রামের ঘর গুলির দেয়ালের ওপর সুন্দর সুন্দর রঙিন চিত্র অঙ্কন করা ছিল, জানতে পারি কালার পকেট থেকে যে রং গুলো পাওয়া গেছে, সেগুলি দিয়ে বিশ্বভারতীর ছাত্ররা ওই রঙিন ছবি গুলি তৈরি করেছেন।
এরপর পার্কের ভিতরে ঢুকলাম, খুবই সুন্দর সাজানো-গোছানো একটি পার্ক, পার্ক বলতে আমরা যা বুঝি সেরকম বাচ্চাদের বিনোদনের ব্যবস্থা নেই ঠিকই, কিন্তু জায়গাটিতে শিক্ষণীয় অনেক জিনিস আছে।
বিভিন্ন রকম ঔষধি গাছ রয়েছে এখানে, এবং প্রত্যেকটি গাছের পাশে বোর্ডে গাছটির নাম লেখা, যেমন- বাসক, সর্পগন্ধা, ঘৃতকুমারী, কালমেঘ, অশ্বগন্ধা, কালো তুলসী, লাল ভেরেন্ডা , নয়ন তারা ইত্যাদি। এছাড়া আমলকি, হরিতকী, বহেরা ইত্যাদি প্রচুর বড় গাছও রয়েছে।
Click here -for video
এখানের অ্যানজিওস্পার্ম কাঠ জীবাশ্ম পুকুরে খনন কাজের সময় পাওয়া যায়।
কাঠ জীবাশ্ম সাধারনত পাললিক শিলায় পাওয়া যায়।
সেই জীবাশ্ম গুলি জ্বালানি হিসেবে( কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম) ব্যবহার করা হয়।
মাটির জল -পলি স্তর এর নিচে গাছের গুড়ি সিলিকা, ক্যালসাইট, উপল ও অন্য অজৈব মিনারেল এর সঙ্গে মিশে মীনারালাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছটিকে পেট্রিফাইড উড এ রূপান্তরিত করে, গ্রীক ভাষায় পেট্রো কথার অর্থ রক বা পাথর ।আক্ষরিক অর্থে কাঠ পাথরে পরিণত হয়।সঠিক গবেষণার মাধ্যমে এই উদ্ভিদ জীবাশ্ম থেকে পলিমাটির সঠিক ভৌগোলিক অবস্থা ,জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশ নির্ধারণ করা যায় , জীবাশ্ম গুলির আপেক্ষিক বয়স বোঝা যায়।
বাংলার বিভিন্ন জেলা যেমন বীরভূম জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ,বর্ধমান ও মেদিনীপুর,বাঁকুড়া জেলায় ও উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলা তে এই কাঠের জীবাশ্ম দেখা যায়।
এই জীবাশ্ম গুলি আজ থেকে প্রায় দেড় কোটি বছর আগের অন্ত মায়োসিন যুগের সাক্ষ্য বহন করে। এর থেকে অনুমান করা যায় অতীতে এই এলাকায় কিছু সুবিশাল বনভূমি ছিল , যা পরে কাঁদা ও বালি চাপা পড়ে প্রস্তুরীভূত জীবাশ্মে পরিণত হয়েছে।
'Biral Sahani Institute in Lucknow ' র বিশেষজ্ঞ দ্বারা জীবাশ্ম গুলো পরীক্ষা করে জানানো হয় এগুলোর বয়স আনুমানিক 15 লক্ষ বছর ।
Directtion- Timing -Ticket Price of Amkhoi Wood Fossil Park
Illambazar থেকে Bolpur যাওয়ার সময় ডানদিকের জঙ্গলের পথ ধরে ফসিল পার্ক এর বোর্ড দেখে পৌঁছে যেতে পারবেন পার্কে।
পার্ক বুধবার বন্ধ থাকে। বাকি দিন গুলোতে সকাল
পার্ক বুধবার বন্ধ থাকে। বাকি দিন গুলোতে সকাল
10 am থেকে 4 pm পর্যন্ত খোলা থাকে।
Ticket Price: Adult: 10/-
Children:-5/-
Student:- 5/-
Conclusion
Amkhoi Wood Fossil Park - সত্যি খুব সুন্দর একটি জায়গা, যেখানে শান্তিনিকেতন ঘুরতে যাওয়ার বা আসার পথে একবার ঢু মারতে পারেন, লাল মাটির সবুজ জঙ্গলের ভিতর এই প্রাকৃতিক গুপ্ত ধণ চাক্ষুষ করতে।
Post a Comment